কিছুদিন আগে OnePlus বাংলাদেশে অফিশিয়ালি এসেছে একটা ফোন নিয়ে। তার কিছুদিন যেতে না যেতেই তারা অফিসিয়ালি আরো একটি ফোন লঞ্চ করল এবং তা OnePlus Nord CE4 Lite 5G। বাংলাদেশে OnePlus Nord CE4 Lite 5G এর প্রাইস 27,999 টাকা।
আজকের আর্টিকেলে থাকবে OnePlus Nord CE4 Lite 5G এর সম্পূর্ণ রিভিউ এবং স্পেসিফিকেশন ওভারভিউ। এটা কখনোই উচিত হবে না আপনার জন্য যে শুধু প্রাইস জেনেই একটা এন্ড্রয়েড ফোন আপনি নিয়ে নিলেন। পরে গিয়ে দেখা যাবে OnePlus Nord CE4 Lite 5G এর একই প্রাইস রেঞ্জে আরো অনেক ভালো ফোন আপনি পাচ্ছেন।
OnePlus Nord CE4 Lite 5G এর লেকিংস বা কি কোয়ালিটিতে এটি পিছিয়ে আছে, Oneplus এর আগের জেনারেশনের ফোনগুলোর তুলনায় এটি কোন কোন প্যারামিটারে এগিয়ে আছে বা পিছিয়ে আছে তার সম্পূর্ণ ধারণা দেওয়া হবে এই আর্টিকেলে। এককথায়, 27,999 বা 28000 টাকায় এই ফোনটা নিলে আপনি ঠকবেন নাকি লাভবান হবেন তার সম্পূর্ণ ডিটেইলস থাকবে। তাই ধৈর্য্য নিয়ে পড়ার অনুরোধ রইল।
OnePlus Nord CE4 Lite 5G আসলে মিডরেঞ্জের একটা ফোন। চলুন এর স্পেসিফিকেশন ওভারভিউ শুরু করা যাক ডিজাইন এবং বিল্ট কোয়ালিটি দিয়ে।
OnePlus Nord CE4 Lite 5G এর ডিজাইন ও বিল্ট কোয়ালিটি
মোট দুটি কালার ভ্যারিয়েন্টে OnePlus Nord CE4 Lite 5G পাওয়া যাচ্ছে। একটা হলো সুপার সিলভার কালার ভ্যারিয়েন্ট এবং অন্যটি মেগা ব্লু কালার। কালারওয়াইজ আমার কাছে সিলভার কালারটাই প্রেফারেবল মনে হয়েছে। কিন্তু যারা একটু বোল্ট কালার পছন্দ করেন তাদের জন্য মেগা ব্লু কালার ভ্যারিয়েন্টটা এপ্রোপ্রিয়েট হতে পারে।
কিন্তু সিলভার কালারে একটা প্রবলেম ফেস করেছি যে প্রচুর পরিমাণে ফিঙ্গারপ্রিন্ট এটাতে লাগে যেহেতু ব্যাকপার্টটা খুবই মসৃণ। পলিকার্বনেটের তৈরি এই ফোনটাকে হাতে নিলে কোন চিপ বা সস্তা ফিলিংস আপনি পাবেন না, খুবই প্রিমিয়াম ফিল দেয় এটি।
শেপের দিক থেকে OnePlus Nord CE4 Lite 5G একটু বক্সিয়ার শেপের। এটার ওজন 191 গ্রাম এবং 5500mAh এর ব্যাটারি এটাতে আছে। মোটামুটি শক্তিশালী ব্যাটারি থাকার পরেও এটার ওজন তত বেশি বাড়ে নি। তাছাড়া হাতে নিলে খুব কমফোর্টেবল ফিল দেয় OnePlus Nord CE4 Lite 5G।
ডানপাশে ভলিউম বাটন এবং পাওয়ার বাটন আছে। বামপাশে আছে হাইব্রিড ন্যানো সিম কার্ড স্লট। নিচের দিকে 3.5mm অডিও জ্যাক। প্রাইমারি মাইক্রোফোন এবং USB-C পোর্টটাও ইউজ্যুয়াল পজিশনে আছে।
OnePlus Nord CE4 Lite 5G এর সাউন্ড কোয়ালিটি
ফোনটার উপরের দিকে একটি সেকেন্ডারি স্পিকার গ্রিল আছে, তবে কোন সেকেন্ডারি নয়েজ ক্যান্সেলেশন মাইক্রোফোন নেই যেটা দওয়া উচিত ছিল এই প্রাইস রেঞ্জের ফোনে। তবে stereo সাউন্ড এক্সপেরিয়েন্স আপনি পাবেন।
বটম স্পিকার এবং উপরের সাইডের স্পিকার মিলে এটা খুব লাউড এবং ক্লিয়ার সাউন্ড প্রডিউস করে। সো, মাল্টিমিডিয়া এক্সপেরিয়েন্সের বেলায় OnePlus Nord CE4 Lite 5G এর সাউন্ড কোয়ালিটি পারফেক্ট।
এবার চলুন কথা বলা যাক ওয়ান অফ দ্যা মেইন ইম্পোর্ট্যান্ট পার্ট ডিসপ্লে নিয়ে। দেখি এর ডিসপ্লে পারফরম্যান্স কেমন।
OnePlus Nord CE4 Lite 5G ডিসপ্লে
6.67inch এর একটা AMOLED প্যানেল ডিসপ্লে এতে দেওয়া হয়েছে। রিফ্রেশ রেট 120Hz এবং এই ডিসপ্লেটির পিক ব্রাইটনেস 2100nits।
ডিসপ্লে ব্রাইটনেস আমার কাছে more than enough মনে হয়েছে। আউটডোরে ব্যবহার করতে গিয়ে তেমন কোন প্রবলেম হয় নি। এর 120Hz বেশ স্মুথ এক্সপেরিয়েন্স দিচ্ছিল।
এবার একটি বিষয় নিয়ে কথা বলি যার কারণে এন্ড্রয়েড ব্র্যান্ড হিসেবে ওয়ানপ্লাসকে অনেক ভোগতে হয়েছিল। সেটা হলো এর গ্রীনলাইন ইস্যু। সবার মনেই এই প্রশ্নটা থাকবে যে OnePlus Nord CE4 Lite 5G তে কোন গ্রিন লাইন আসবে কিনা।
যদিও ওয়ান প্লাসের এখনকার যে ফোনগুলো প্রডিউস হচ্ছে ঐসব ফোনে গ্রিন লাইন আসার সম্ভাবনা অনেক কম। কিন্তু তারপরেও যদি প্রবলেম হয় তাহলে OnePlus Nord CE4 Lite 5G ফোনটি ওয়ান প্লাস অফিশিয়ালি লঞ্চ করেছে। সো ডেফিনেটলি এটা ওয়ারেন্টির আওতাভুক্ত থাকবে যদি না আপনি এটিকে ফিজিক্যালি ডেমেজ করে ফেলেন, পানি দিয়ে বা পুড়িয়ে ফেলে অথবা অন্য কোনভাবে।
অর্থাৎ এক্সিডেন্টালি যদি আপনি এটাকে ড্যামেজ না করেন তাহলে ওয়ারেন্টির আওতাভুক্ত হবে।
যদিও ওয়ানপ্লাস যখন বাংলাদেশে অফিসিয়ালি প্রবেশ করে তখন তারা বোল্ডলি এটা বলে যে তাদের সব গ্লোবাল ভ্যারিয়েন্টে এই গ্রিন লাইন ইস্যুটি ফিক্স করে দেওয়া হবে। কিন্তু সেটা নিয়ে অনেক ধোঁয়াশা আছে, তাদের কথাটা এখনো পর্যন্ত স্পষ্ট না।
এর বাইরে দুই পাশের ডিসপ্লে vessel মোটামুটি ন্যারো এবং ওপরের দিকের ক্যামেরা কাট আউটটাও মোটামুটি ছোট।
সো, ডিসপ্লে থেকে কনটেন্ট দেখার সময় খুব ভালো এক্সপেরিয়েন্স আপনারা পাবেন। তাছাড়া HD কন্টেন্ট ও স্ট্রিম করতে পারবেন।
এবার দেখি এর হার্ডওয়্যার স্পেসিফিকেশন
আগেই বলে রাখি এই ফোনটা একটা ভ্যারিয়েন্টেই বাংলাদেশে লঞ্চ হয়েছে, 8/256GB। LPDDR 4s টাইপের RAM এবং UFS 2.2 টাইপের ইন্টার্নাল স্টোরেজ এটাতে দেওয়া হয়েছে।
প্রসেসর
অবশ্যই OnePlus Nord CE4 Lite 5G তে চিপসেট বা প্রসেসর বা এন্ড্রয়েড প্রাণভোমরা হিসেবে দেওয়া হয়েছে QUALCOM SNAPDRGON 695। No wonder। কোন সারপ্রাইজ-ই ছিলনা আসলে।
অথচ OnePlus Nord CE3 Light এবং OnePlus Nord CE2 Light এই দুইটি ফোনে অর্থাৎ OnePlus Nord CE4 Lite 5G এর প্রিভিয়াস জেনারেশনে, যেগুলো 2021 সালের ফোন ছিল, সেগুলোতেও একই প্রসেসর ব্যবহার করা হয়েছে।
অথচ 2024 সালে এসে 28000 টাকার একটা ফোনে ওয়ানপ্লাস একই প্রসেসরটাই ব্যবহার করল। প্রসেসরের দিক দিয়ে ওয়ানপ্লাস চাইলে এই ফোনে আরো আপগ্রেড করতে পারত। প্রসেসরের ফলে এই ফোনটাকে বেশ পুরনো মনে হচ্ছে, একটু আন্ডার পাওয়ারও মনে হচ্ছে।
এখন নতুন ফোনগুলোতে আমরা আরো বেটার প্রসেসর দেখেছি। এই ফোনে ওয়ানপ্লাস প্রিভিয়াস জেনারেশনের প্রসেসর ব্যবহার করায় ডিসপ্লেতে 120Hz রিফ্রেশ রেট এবং AMOLED হওয়ার পরেও আপনি চাইলেও HDR ভিডিও এই ফোনে দেখতে পারবেন না। এমনকি 4K ভিডিও এখানে প্লে করতে পারবেন না শুধুমাত্র লেস পাওয়ারড প্রসেসরের কারণে। এটা কিন্তু প্রসেসরের লিমিটেশন, ডিসপ্লের না।
অবশ্য আপনার ডিমান্ডে যদি এসব না থাকে তাহলে প্রসেসরটা আপনার জন্য পারফেক্ট। Day to day লাইফে এন্ড্রয়েড ফোনে স্বাভাবিক কাজকর্মের বেলায় এই প্রসেসরটা দিয়ে আপনি কোন প্রবলেম ফেস করবেন না। আপনি চাইলে হেভি মাল্টি টাস্কিংও করতে পারবেন। কোন ধরনের লেগিংস পাবেন না। স্বাভাবিক সব কাজ যেমন ইন্টারনেট ব্রাউজিং, মাল্টি টাস্কিং, ফেসবুকিং, ইউটিউবে ভিডিও প্লে করা ইত্যাদি খুব স্মুথলি করতে পারবেন।
গেমিংয়ে যেমন OnePlus Nord CE4 Lite 5G
গেমিংয়ের কথা যদি বলেন তাহলে পাবজি, কল আপ ডিউটি ইত্যাদি হাইলি গ্রাফিক্সড ইন্টেন্সিভ গেমগুলো লো টু মিডিয়াম সেটিংসে খেলতে পারবেন। তাও মাঝে মধ্যে একটু ব্রেক ড্রপ দেখবেন।
হিটিং ইস্যু
হিটিং ইস্যুর ব্যাপারে যদি বলি তাহলে ওভারলি হিট হচ্ছিল না। বিশেষ করে গেমিংয়ের সময়। চার্জে দিলে একটু হিট হয়। কিন্তু এমন কোন ম্যাসিভ হিট হচ্ছিল না যে পারফরম্যান্সে অসুবিধা করবে।
ওভারঅল যদি এটার প্রসেসর নিয়ে কথা বলি তাহলে এটার বেশ কিছু লিমিটেশন আছে স্পেশালি এই প্রাইস রেঞ্জে। Even আপনি 4K ভিডিও রেকর্ডও করতে পারবেন না। এ ধরনের ছোট ছোট বিষয়গুলোর কারণেই এই প্রসেসর বা চিপসেটকে একটু আন্ডার পাওয়ার মনে হচ্ছে।
ওয়ানপ্লাসের উচিত ছিল এটাতে আরেকটু বেটার প্রসেসর প্রোভাইড করা। যাইহোক তারা দেয়নি।
OnePlus Nord CE4 Lite 5G এর সফটওয়্যার স্পেসিফিকেশন
সফটওয়্যারের কথাই যদি বলি Android 14 আছে এটাতে। তার উপর OxygenOS 14 দেওয়া হয়েছে।OxygenOS নিয়ে আমরা বেশ প্রশংসাই করে থাকি। ওয়ান অফ দা বেস্ট ক্লিন UI। OnePlus Nord CE4 Lite 5G এর UI নিয়ে আমাদের কোন কমপ্লেইন নেই।
এটার সফটওয়্যার আপডেট রিলেটেড অফিশিয়াল ইনফরমেশন আমরা যদিও পাই নি। তবে ওয়ানপ্লাস সাধারণত যেটা করে, দুই বছরের সফটওয়্যার আপডেট দিয়ে থাকে। তবে এটা প্রমিজড না।
OnePlus Nord CE4 Lite 5G এর ক্যামেরা সেকশন
ক্যামেরা সেকশনে নাম্বারওয়াইজ দেখলে একটু ডাউনগ্রেড মনে হবে কিন্তু এটা আসলে রিয়েল লাইফ পারফরম্যান্সে একটা আপগ্রেড। অর্থাৎ গত বছরের ওয়ানপ্লাস মডেলে 108MP দেওয়া হয়েছে কিন্তু এবার OnePlus Nord CE4 Lite এর ক্ষেত্রে দেওয়া হয়েছে 50MP ক্যামেরা সেন্সর, কিন্তু গত বছরের SAMSUNG সেন্সর পরিবর্তন করে এবার SONY-র LYT 600 সেন্সর এটাতে দেওয়া হয়েছে।
লাস্ট ইয়ারের 2MP এর ইউজলেস ম্যাক্রোল্যান্সটা এবার ওয়ানপ্লাস রিমুভ করে দিয়েছে এবং শুধুমাত্র 2MP এর ডেপথ সেন্সরটা তারা রেখেছে। But sadly, এবারও কোন ধরনের Ultra wide shooter নেই। এই প্রাইসে আল্ট্রা ওয়াইড শ্যুটারটা দেওয়া দরকার ছিল।
ফ্রন্ট ক্যামেরা হলো 16MP এর। খুব ডিসেন্ট এবং সুন্দর পিকচার এটা দিয়ে তুলতে পারবেন। আমার কাছে ভালো লেগেছে। এমনকি সামনের ক্যামেরা দিয়েও আপনি 1080 30-fps এ ভিডিও রেকর্ড করতে পারবেন।
OnePlus Nord CE4 Lite 5G দিয়ে তোলা পিকচারগুলোর কথাই যদি বলি তাহলে ছবির কোয়ালিটিতে আমার প্রত্যাশা একটু বেশি ছিল। ছবির কালারগুলো আমার কাছে একটু বেশি washed out লেগেছে।
ক্যামেরার কালার সেন্সিংটাকে আরেকটু বেশি আপগ্রেড করা যেত। পাশাপাশি পিকচারের ডিটেইলের পরিমাণও অত আহামরি ভালো ছিল না।
তবে ডায়নামিক মোডের পারফরম্যান্স ঠিকঠাক ছিল। পোর্ট্রেট মোডের সাবজেক্ট সেপারেশনটা ঠিকঠাক ছিল, তবে ব্যাকগ্রাউন্ডের Blurryness টা আরেকটু ন্যাচারাল করা যেত বলে মনে হয়েছে।
একটু লো-লাইটে ছবির কোয়ালিটি এতটাও ভালো না। একদমই এভারেজ কোয়ালিটির ছবি প্রডিউস করছিল।
ভিডিও কোয়ালিটি
OnePlus Nord CE4 Lite 5G দিয়ে সর্বোচ্চ 1080 এবং 30fps এর ভিডিও রেকর্ড করতে পারবেন। 4K তো নাই, আবার 1080 এর 60-fps এ ভিডিও রেকর্ড করার অপশনও নেই। আগেই বলেছিলাম এটা প্রসেসরের লিমিটেশন।
যদিও এটাতে YOS আছে। তবে এটা আহামরি তেমন ভালো পারফর্ম করে নি। একটু শ্যাকি ফুটেজ দেখাচ্ছিল এটা। But আমার কাছে এর স্ট্যাবিলাইজেশন ঠিকঠাক মনে হয়েছে।
তবে এই প্রাইসে ভিডিও ক্যাপাবিলিটির বেলায় ওয়ানপ্লাসের কাছ থেকে আরো বেশি প্রত্যাশা ছিল।
মোটামুটি ক্যামেরা সেকশন নিয়ে যদি উপসংহারে আসি তাহলে বেশ কিছু লিমিটেশন আমরা দেখতে পাচ্ছি। যেমন -
✓ 4K ভিডিও রেকর্ড করার অপশন নাই
✓ ছবির কোয়ালিটি আমার কাছে ততটা ইম্প্রেসিভ মনে হয় নি (আমার প্রত্যাশা একটু বেশিই ছিল)। যদিও আপনার কাছে ভালো লাগতে পারে।
✓ 1080 60-fps এ ভিডিও রেকর্ডের অপশন নেই। তবে আপনি স্যাটিসফাইড হবেন।
✓ YOS অপশন এভেইলেবল।
✓ Both রেগুলার এবং পোর্ট্রেইট মুডে সাবজেক্ট সেপারেশন ঠিক আছে।
ব্যাটারি কোয়ালিটি (সারপ্রাইজ এখানে)
আগেই বলেছিলাম 5500mAh এর ব্যাটারি দেওয়া হয়েছে। মডারেট টু হেভি ইউজ করলেও এটা দিয়ে ইজিলি আপনি ফুল ডে পার করতে পারবেন। হেভি ইউজ বলতে সোশ্যাল মিডিয়া ব্রাউজিং, একটু বেশি ভিডিও দেখা ইত্যাদি। এই কাজগুলো করে সারাদিন পার করতে পারবেন।
তবে গেমিং যদি করেন তাহলে স্বাভাবিকভাবেই সারাদিন পার করতে পারবেন না। তবে গেমিং ছাড়া স্বাভাবিকভাবে ব্যবহার যদ করেন তাহলে সারাদিন পার করার পরেও চার্জ একটুখানি থেকে যাবে।
আরেকটা সারপ্রাইজ হলো OnePlus Nord CE4 Lite 5G এর বক্সে 80W এর চার্জার দেওয়া হয়েছে। এখানে একটা কনফিউশন কাজ করতে পারে। এই ফোনটার আরেকটা মডেল ইউরোপে লঞ্চ হয়েছে যেটাতে বক্সের ভিতর চার্জার নেই এবং ব্যাটারি ক্যাপাসিটিও কম। কিন্তু বাংলাদেশ ভ্যারিয়েন্টে 80W এর চার্জার এবং 5500mAh এর ব্যাটারি আপনি সাথে পেয়ে যাচ্ছেন।
এই চার্জারটা দিয়ে চার্জ দিতে গিয়ে দেখা গেল 1 ঘন্টা 5 বা 10 মিনিটের মতো সময় নিচ্ছে ফুল চার্জ হতে। যেটা আমাকে একটু সারপ্রাইজ করেছে। মানে, 80W হলে তো আরো তাড়াতাড়ি চার্জ হওয়ার কথা। কিন্তু পরে একটু রিসার্চ করে দেখা গেল, আপনার বাসার ভোল্টেজের কারণে চার্জিং স্পিড কম বেশি হতে পারে।
অন এভারেজ ধরে নিতে পারেন 55W এ এটি চার্জ হবে। তবে মনে রাখবেন 80W চার্জার মানেই সবসময় 80W এই চার্জ হবে এমন কোন কথা নেই।
ওভারঅল ব্যাটারি ব্যাকআপ এবং চার্জিং স্পিড নিয়ে কোন অভিযোগ নেই। সবকিছুই ঠিকঠাক এই প্রাইস রেঞ্জে।
এর বাইরে এটাতে দরকারি সব সেন্সর আছে। ইন-ডিসপ্লে (নিচের দিকে) ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার আছে। এটা কিন্তু বেশ ফাস্ট এবং একুরেটলি কাজ করছিল। তাছাড়া কল কোয়ালিটিও ঠিকঠাক ছিল। কোন ধরনের নেটওয়ার্কিং ইস্যু আসে নি।
শেষকথা
সবকিছু মিলিয়ে যদি উপসংহারে আসি তাহলে বলব, ফোনটি যে প্রাইসে লঞ্চ হয়েছে বাংলাদেশে সে প্রাইসে আমার সবচেয়ে বড় অভিযোগ হলো এর প্রসেসর নিয়ে। আরেকটু বেটার প্রসেসর এখানে দেয়া যেত।
প্রসেসরটা তুলনামূলক ভালো হলে আমরা কিন্তু বেশ কিছু জায়গায় অটোমেটিক্যালি ইমপ্রুভমেন্ট দেখতাম। যেমন ভিডিও রেকর্ডিং, ভিডিও প্লেব্যাক এবং সেই সাথে পিকচার কোয়ালিটিটাও আমরা যথাযথ দেখতাম।
সবকিছু মিলিয়ে আমার মনে হয় এই ফোনের একমাত্র ড্রব্যাক বা কমতি হলো এর চিপসেট বা প্রসেসর। বাকি জিনিসগুলো সব ঠিক আছে।
আরো দেখুন,
- ওয়াইফাই রাউটার কিনতে চান? ৭টি বিষয় যাচাইয়ের আগে কিনলে ঠকবেন
- ল্যাপটপ বাছাইয়ে দ্বিধা? আপনার বাজেটে সবচেয়ে ভালো ল্যাপটপ কিনুন ১৩ টি উপায়ে
এই ছিলো OnePlus Nord CE4 Lite 5G এর অনেস্ট রিভিউ। এই ফোনটার সব ভালো খারাপ আপনাদেরকে জানিয়ে দিয়েছি। এবার এটা নিবেন কি নিবেন না সব আপনার ওপর নির্ভর করে। কোন বিষয়ে আরো স্পষ্ট তথ্যের প্রয়োজন হলে কমেন্টে জানান। উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব।
Reviewed by: Sohag360
0 Comments